রুদ্রাক্ষ একটি পবিত্র ফল যা শিব পুরাণ এবং অন্যান্য ধর্মগ্রন্থে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখিত হয়েছে। রুদ্রাক্ষের বিভিন্ন মুখের গুণাবলী নিচে বিস্তারিতভাবে দেওয়া হল:
১. এক মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এক মুখী রুদ্রাক্ষ সবচেয়ে শক্তিশালী এবং এটি শিবের প্রতীক। এটি শুদ্ধতা, আধ্যাত্মিকতা, এবং উচ্চতর চেতনার জন্য উপকারী।
– উপকারিতা: এটি ধারকের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, ধন-সম্পদ এবং মানসিক শান্তি প্রদান করে।
২. দুই মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি শিব এবং শক্তির যুগল প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি বিবাহিত জীবনে শান্তি এবং সমন্বয় বজায় রাখে এবং সম্পর্কের সমস্যা দূর করে।
৩. তিন মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি অগ্নির প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি ধারকের মধ্যে আত্মবিশ্বাস এবং মনোবল বৃদ্ধি করে। এটি স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার প্রতীক।
৪. চার মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি ব্রহ্মার প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি সৃষ্টিশীলতা, বুদ্ধি, এবং জ্ঞান বৃদ্ধি করে। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
৫. পাঁচ মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি কালাগ্নির প্রতীক, যা শিবের পাঁচটি মুখের প্রতিনিধিত্ব করে।
– উপকারিতা: এটি সবার জন্য উপযোগী। এটি মানসিক শান্তি এবং সুস্থতা প্রদান করে, এবং পাপ মোচনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
৬. ছয় মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি কার্তিকেয়ের প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি বুদ্ধি, ক্ষমতা এবং মনোবল বৃদ্ধি করে। এটি বিশেষভাবে কর্মজীবনে সফলতা লাভের জন্য উপকারী।
৭. সাত মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি লক্ষ্মীর প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি অর্থ এবং ধনসম্পদ বৃদ্ধি করে এবং আর্থিক সমস্যার সমাধান করে।
৮. আট মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি গনেশের প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি বাধা দূর করে এবং সৌভাগ্য নিয়ে আসে। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য খুব উপকারী।
৯. নয় মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি দেবী দুর্গার প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি সাহস, শক্তি এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে। এটি ধৈর্য ও সাহসিকতা বাড়াতে সহায়ক।
১০. দশ মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি বিষ্ণুর প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি ধারকের মধ্যে শারীরিক ও মানসিক রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়ক।
১১. এগারো মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি রুদ্রের প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি শক্তি এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে। এটি ধারকের মধ্যে আধ্যাত্মিক শক্তি বৃদ্ধি করে।
১২. বারো মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি সূর্যের প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি ধারকের মধ্যে স্বাস্থ্য এবং ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি বিশেষ করে নেতৃত্ব গুণাবলী বৃদ্ধি করে।
১৩. তেরো মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি কামদেবের প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি সৌন্দর্য, আকর্ষণ এবং প্রেমের প্রতীক। এটি বৈষয়িক সাফল্য এবং আনন্দ এনে দেয়।
১৪. চৌদ্দ মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি হনুমানের প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি শক্তি, সাহস, এবং ধৈর্য বৃদ্ধি করে। এটি অতীন্দ্রিয় ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য উপকারী।
১৫. পনেরো মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি পাঁচালী দেবীর প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি ধনসম্পদ এবং ঐশ্বর্য বৃদ্ধি করে। এটি ভক্তির উন্নতিতে সহায়ক।
১৬. ষোল মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি ভৈরবের প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দূর করে এবং সুস্থতা প্রদান করে।
১৭. সতেরো মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি বিষ্ণুর প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি ধনসম্পদ এবং সাফল্য প্রদান করে। এটি রাজকীয়তার প্রতীক।
১৮. আঠারো মুখী রুদ্রাক্ষ:
– **গুণাবলী:** এটি ভূমি দেবীর প্রতীক।
– **উপকারিতা:** এটি ধারকের মধ্যে স্থিতিশীলতা এবং জীবনের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে।
১৯. ঊনিশ মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি নারায়ণের প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি ধন, ঐশ্বর্য এবং সাফল্য প্রদান করে। এটি ভক্তির প্রতীক।
২০. বিশ মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি বিষ্ণুর প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি ধারকের মধ্যে সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক উন্নতি এবং পূর্ণতা অর্জন করতে সহায়ক।
২১. একুশ মুখী রুদ্রাক্ষ:
– গুণাবলী: এটি কুবেরের প্রতীক।
– উপকারিতা: এটি ধন, সম্পদ, এবং শীর্ষস্থানীয় সাফল্য প্রদান করে। এটি ধারকের মধ্যে অমরত্ব এবং চিরস্থায়ী জীবনশক্তির প্রতীক।
প্রতিটি রুদ্রাক্ষের বিশেষ গুণ রয়েছে, তবে সঠিক ফল পেতে এবং উপকারিতার জন্য রুদ্রাক্ষ ধারনের আগে একজন যোগ্য জ্যোতিষীর পরামর্শ নেওয়া উচিত।