জন্মাষ্টমী: শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি ও পালনবিধি
জন্মাষ্টমী আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে, যা হিন্দু চন্দ্র ক্যালেন্ডার অনুসারে ২৬ অগাস্টে পড়েছে। রোহিণী নক্ষত্রের শুভ মুহূর্তে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল। এবছর জন্মাষ্টমী তিথি ২৬ অগাস্ট বিকেল ৩ টে ৫৫ মিনিটে শুরু হবে এবং পরের দিন ২৭ অগাস্ট বিকেল ৩ টে ৩৮ মিনিটে শেষ হবে।
জন্মাষ্টমীর ঐতিহ্য ও পালনের রীতি:
শাস্ত্রমতে, ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ পক্ষের অষ্টমী তিথিতে এবং রোহিণী নক্ষত্রে শ্রীবিষ্ণুর অষ্টম অবতার শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়। সেই থেকে শুরু হয় জন্মাষ্টমী পালনের প্রথা। অনেক প্রদেশে এই দিনে ‘দহি হান্ডি’ উৎসবও পালিত হয়। উত্তরভারতে এবং বাংলার ঘরে ঘরে শ্রীকৃষ্ণকে বালগোপাল হিসেবে পূজা করা হয়।
অনেকেই জন্মাষ্টমীর দিনে উপোস করেন বা নিরামিষ আহার গ্রহণ করেন। উপোসের পাশাপাশি হরিনাম জপ, শ্রীকৃষ্ণের লীলা শ্রবণ এবং ভগবত গীতা পাঠ করা শুভ বলে ধরা হয়।
জন্মাষ্টমীর নিয়ম:
শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি পালন করার জন্য কিছু বিশেষ নিয়ম মানা উচিত:
1. উপোস ও নিরামিষ আহার: জন্মাষ্টমীর দিন উপোস করতে পারেন বা নিরামিষ আহার করতে পারেন।
2. হরিনাম জপ ও ভগবত গীতা পাঠ: হরিনাম জপ করুন এবং ভগবত গীতা পাঠ করুন।
3. পরের দিনের নিয়ম: জন্মাষ্টমীর পরের দিন সকালে স্নান করে পারণ মন্ত্র পাঠ করতে হবে। এর মাধ্যমে ব্রত সমাপন হয়।
পারণ মন্ত্র:
– “সর্বায় সর্বেশ্বরায় সর্বপতয়ে সর্বসম্ভবায় গোবিন্দায় নমো নমঃ।”
– “ভূতায় ভূতেশ্বরায় ভূতপতয়ে ভূতসম্ভবায় গোবিন্দায় নমো নমঃ।”
পূজার উপকরণ: জন্মাষ্টমী ব্রত পালনের জন্য যা যা প্রয়োজন:
– ফুল, আতপ চাল, ফলের নৈবেদ্য, তুলসীপাতা, দূর্বা, ধূপ, দীপ, পঞ্চগব্য, পঞ্চগুড়ি, পাট, বালি, পঞ্চবর্ণের গুড়ো, মধুপক্ক, আসন-অঙ্গুরী।
শ্রীকৃষ্ণকে ভোগ নিবেদন: জন্মাষ্টমীর দিন সকালে গোপালকে লাড্ডু নিবেদন করুন। রাতের পূজায় চিনি, মিছরি, এবং শুকনো ফল নিবেদন করতে পারেন।
ব্রত ভঙ্গের পরও জন্মাষ্টমীর পরের দিন নিরামিষ আহার করতে পারলে শ্রীকৃষ্ণের বিশেষ কৃপা পাওয়া যায়।
এই নিয়মগুলি পালন করলে শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদ সহজেই লাভ করা যায়।