কলমি শাক, যাকে অনেকেই জলকলমি শাক হিসেবে চেনেন, একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর সবজি। এটি ভেজা জমি বা পানিতে জন্মায় এবং এর পাতা ও ডাঁটা খাওয়া যায়। কলমি শাক শুধু স্বাদের জন্য নয়, বরং এর পুষ্টিগুণের জন্যও বিখ্যাত। এই শাক নিয়মিত খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে আপনি পাবেন নানা ধরণের স্বাস্থ্য উপকারিতা। আসুন জেনে নেই কলমি শাকের কিছু প্রধান উপকারিতা।
১. পুষ্টিগুণে ভরপুর
কলমি শাক ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং আঁশ সমৃদ্ধ। এই শাকের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা দেহের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
২. রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সহায়ক
আয়রনের অভাবে অনেকেই রক্তশূন্যতায় ভোগেন। কলমি শাকে উচ্চ মাত্রায় আয়রন থাকার কারণে এটি রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকরী। নিয়মিত কলমি শাক খেলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়।
৩. চোখের জন্য উপকারী
কলমি শাকে ভিটামিন এ থাকার কারণে এটি চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। নিয়মিত এই শাক খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
৪. হাড় ও দাঁতের শক্তি বাড়ায়
কলমি শাকে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস থাকে যা হাড় ও দাঁতের গঠন ও শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটি হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধেও সহায়ক।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কলমি শাক শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি নিয়মিত খেলে ঠাণ্ডা, কাশি ও অন্যান্য সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
৬. ওজন কমাতে সহায়ক
কলমি শাকে ক্যালোরির পরিমাণ কম, কিন্তু এতে আঁশের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই এটি খেলে পেট ভরা থাকে এবং দীর্ঘ সময় ক্ষুধা লাগে না। ফলে ওজন কমানোর জন্য এটি একটি উপযুক্ত খাদ্য।
৭. হজমশক্তি উন্নত করে
আঁশ সমৃদ্ধ কলমি শাক হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। এটি অন্ত্রের জন্য খুবই উপকারী।
৮. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
কলমি শাকের মধ্যে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যারা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন, তাদের জন্য কলমি শাক খুবই উপকারী।
৯. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
কলমি শাকে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখে।
১০. ত্বকের যত্নে
কলমি শাকে থাকা ভিটামিন এ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং বার্ধক্যজনিত দাগ-ছোপ দূর করে।
নিয়মিত কলমি শাক খেলে শরীরের অনেক ধরণের উপকার পাওয়া যায়। এটি একটি পুষ্টিকর সবজি যা সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কলমি শাক অন্তর্ভুক্ত করুন এবং সুস্থ জীবনযাপন করুন।